বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১০:১০ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :

বানিয়াচং-হবিগঞ্জ সড়কে বাড়তি ভাড়া আদায়, যাত্রীদের ক্ষোভ

রায়হান উদ্দিন সুমন, বানিয়াচং (হবিগঞ্জ) : বানিয়াচং হবিগঞ্জ রোডের শুটকি সেতুর সংস্কার কাজ হওয়ায় এই রোড দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনগুলো যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া আদায় করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দীর্ঘদিন ধরে সেতুটির কয়েকটি জায়গায় লোহার প্লেইটগুলোতে গর্ত এবং ফাটল দেখা দেয়ায় মেরামতের শুরু করেছে সড়ক ও জনপদ বিভাগ।

মঙ্গলবার (৩রা মার্চ) থেকে মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। চলবে আগামী শনিবার পর্যন্ত। এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে হবিগঞ্জ সড়ক বিভাগ। হবিগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে-হবিগঞ্জ বানিয়াচং সড়কের ( জেড-২৪০৩) ১২তম কিলোমিটারে অবস্থিত শুটকি বেইলি সেতুর জরুরি মেরামতের জন্য ০৩-০৩-২০২০ খ্রি: তারিখ হতে ০৭-০৩-২০২০ খ্রি:তারিখ পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৮ঘটিকা হইতে সন্ধ্যা ৬ঘটিকা পর্যন্ত সেতুটিতে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। বিজ্ঞপ্তিতে সকলের সহযোগীতার পাশাপাশি সর্বসাধারণের সাময়িক অসুবিধার জন্য “সওজ”কর্তৃপক্ষ আন্তরিকভাবে দু:খ প্রকাশ ও করেছে।

এদিকে সেতু মেরামতের অজুহাতে যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া আদায় করছে যানবাহনগুলোর চালকরা। বিশেষ করে মালামাল নিয়ে হবিগঞ্জ থেকে বানিয়াচংয়ের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া যানবাহান গুলো তাদের মালামাল নিয়ে পড়ছেন চরম বিপাকে। যাতায়াতের ক্ষেত্রে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে সিএনজি অটোরিক্সা, মিনিবাস, মেক্সিসহ জিপ গাড়িগুলো। হবিগঞ্জ থেকে বানিয়াচং এর দুরত্ব প্রায় ১৮ কিলোমিটার। সিএনজি অটোরিকশা করে হবিগঞ্জ বানিয়াচং স্ট্যান্ড থেকে বানিয়াচং নতুনবাজার অথবা বড়বাজারের ভাড়া জনপ্রতি ৪০টাকার পরিবর্তে বর্তমানে যাত্রীদের কাছ থেকে শুটকি সেতু পর্যন্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৩০টাকা করে। যাত্রীরা সেতু পার হয়ে অপর একটি সিএনজিতে করে বানিয়াচং নতুনবাজার অথবা বড়বাজার স্ট্যান্ড পর্যন্ত মাত্র ৪ কিলোমিটারের ভাড়া নিচ্ছে ২০টাকা। উভয়দিক থেকে মোট জনপ্রতি ৫০টাকা করে নিচ্ছে সিএনজি চালকরা।

অন্যদিকে ছোট ছোট মিনিবাস,মেক্সি ও জীপ গাড়ি হবিগঞ্জ থেকে বানিয়াচং আসতে জনপ্রতি ভাড়া নিচ্ছে ২৫টাকার পরিবর্তে শুটকি সেতু পর্যন্ত ২০টাকা এবং শুটকি সেতু পার হয়ে বানিয়াচং আসতে ১৫ টাকা নিচ্ছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে পোস্ট/কমেন্ট করেছেন।

উবায়দুল হক ময়নুল নামে এক ফেসবুক ইউজার লিখেছেন-প্রতিবারই যখন সেতুর মেরামতের কাজ চলে তখনই ড্রাইভাররা যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে। এর একটা ব্যবস্থা করা দরকার। মুন মিয়া নামে আরেকজন লিখেন-ওরা অজুহাত খোঁজে এখন পেয়েছে। তারপরও এদের পেঠ ভরবেনা। অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম শাহিন লিখেন-এই সেতুর মেরামত করতে কত হাজার বছর লাগবে একমাত্র আল্লাহই জানেন। খান আজমত নামে আরেকজন লিখেন-২০টাকা আর ৩০টাকা মোট ৫০টাকা ভাড়া নিচ্ছে তারা। আগের ভাড়া থেকে ১০টাকা বেশি নিচ্ছে। দেখার কেউ নেই। শিক্ষক আবুল মনসুর তুহিন লিখেন-কিচ্ছু করার নেই জোর যার মুল্লুক তার। বাড়তি ভাড়া নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন ওই রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী চাকুরীজীবি আবুল ফজল। তিনি জানান, সেতু মেরামতের অযুহাতে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়াটা অযৌক্তিক। কাজ হচ্ছে সেতুর তাহলে আমরা বাড়তি ভাড়া কেন দিব। এই চাপটা আমাদের উপর কেন। এর জবাব কে দিবে ?

মানিক মিয়া নামে আরেকজন যাত্রী জানান, কয়েকদিন পরপরই এই সেতুতে মেরামতের কাজ হয়। এর থেকে চিরতরে মুক্তির কোনো পথ থাকলে তা করছেন না কেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। অনার্স ফাইনাল পরীক্ষার্থী বৃন্দাবন কলেজের ছাত্র এহতেশাম জানান, মেরামত যদি করতে হয় তাহলে আরো দুই সপ্তাহ আগ থেকেই কাজটা করলে কি এমন ক্ষতিটা হতো। আমাদের এখন নির্দিষ্ট সময়ের অনেক আগে বাড়ি থেকে বের হতে হচ্ছে। সামসুদ্দিন নামের আরেক যাত্রী জানান, যাত্রীদের এভাবে পকেট কাটা হলেও তা যেন দেখার কেউ নেই। জনপ্রতিনিধিদের ও যেন কোনো মাথা ব্যথা নেই। ফলে চালকদেও কাছে অসহায় হয়ে আর বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়ে বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে আমাদের। আমরা তাদের কাছে জিম্মি।

বাড়তি ভাড়া নেওয়ার প্রসঙ্গে বানিয়াচং সিএনজি মালিক সমিতির সভাপতি (একাংশ) মোয়াজ্জেম হোসেনের মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তা ব্যস্ত থাকায় সম্ভব হয়নি।

অন্যদিকে সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে গতিতে কাজ চলছে আশা করছি নির্ধারিত সময়ের আগেই সেতুটির মেরামতের কাজ শেষ হবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com